
শরীয়তপুর প্রতিনিধি॥ নড়িয়ার সেই কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণকারী ৪ জন আটক। শরীয়তপুর নড়িয়া উপজেলায় এক কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ৪ জনকে আটক করেছে নড়িয়া থানা পুলিশ। শনিবার (১৪ মার্চ) দিবাগত রাতে ঢাকা শ্যামপুর সেনানীবাস এলাকা থেকে ৩জন ও জাজিরা উপজেলার মঙ্গলমাঝিরঘাট এলাকা থেকে ১ জনকে আটক করে পুলিশ।
আটকরা হলেন- নড়িয়া উপজেলার বিঝারি ইউনিয়নের কান্দিগাঁও গ্রামের জয়নাল মোল্লার ছেলে বেলায়েত হোসেন শৃঙ্খল মোল্লা (২৫), আলমগীর মোল্লার ছেলে মুরাদ মোল্লা (২২), সদর উপজেলার দাত্রা গ্রামের কালু সরদারের ছেলে হৃদয় সরদার (২৫) ও কাশেম সরদারের ছেলে আরিফ সরদার (২৩)।
এর আগে শুক্রবার (১৩ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার বিঝারি ইউনিয়নের কান্দিগাঁও এলাকায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। শনিবার (১৪ মার্চ) সকালে চারজনকে আসামী করে নড়িয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ওই ছাত্রীর বড় ভাই।
এ ঘটনায় আসামীদের ফাঁসি চেয়ে রবিবার (১৫ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছে কলেজ-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, পরিবার ও বিঝারী এলাকাবাসী। পরে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্বারকলিপি প্রদান করা হয়।
মানববন্ধনে এসে শিক্ষার্থীরা বলেন, পূর্বেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? আমরা স্কুল-কলেজে স্বাধীনভাবে যেতে চাই। আমরা আর ধর্ষণের স্বীকার হতে চাই না। তাই ধর্ষকদের ফাঁসি চাই।
ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, আমার মেয়েকে ওরা খারাপ কাজ করেছে। মেয়েকে এখন কিভাবে বিয়ে দেব, গ্রামে কেমনে মুখ দেখাবো? আমার মেয়েকে যারা খারাপ কাজ করেছে তাদের আটক করেছে পুলিশ। আটকদের ফাঁসি দেয়া হোক।
হাসপাতালে ভর্তি ওই ছাত্রী বলেন, শৃঙ্খল, হৃদয়, মুরাদ ও আরিফের হাত-পায়ে ধরলেও আমাকে ছাড়েনি। এখন আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মনীর আহম্মেদ খান বলেন, ওই ছাত্রীর মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছে। রিপোর্ট সম্পূর্ণ হলে বলা যাবে তার সঙ্গে কি হয়েছিল। রিপোর্ট পেলে আদালতে প্রেরণ করা হবে।
নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বড় ভাই বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছে। ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আদালতে সপর্দ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে শরীয়তপুর সরকারি কলেজে একটি মিটিংয়ে যোগ দেন কলেজছাত্রী। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিটিং শেষে অটোরিকশাযোগে পালং উত্তর বাজার দিয়ে কানার বাজার যান তিনি। সেখান থেকে নিজ এলাকা নড়িয়ার কাপাশপাড়া যাওয়ার জন্য অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করেন কলেজছাত্রী।
রিকশা না পেয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে হাঁটতে থাকেন তিনি। কান্দিগাঁও এলাকায় পৌঁছলে কলেজছাত্রীকে তুলে নিয়ে যায় ওই এলাকার শৃঙ্খল মোল্লা। পরে নিপু খার মাছের ঘেরে আটকে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়।
এরপর শৃঙ্খলের তিন বন্ধু হৃদয় শিকদার, মুরাদ মোল্লা ও আরিফ সরদারও (২৩) কলেজছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। সেখানে কলেজছাত্রীকে ফেলে পালিয়ে যায় তারা। পরে তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা।