নড়িয়া (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি: শরীয়তপুর নড়িয়া উপজেলায় বাথরুম নির্মাণ করা নিয়ে ঝগড়া করে মালয়েশিয়া প্রবাসীর স্ত্রী তানিয়া আক্তার (২৩) নামে এক গৃহবধূকে হত্যা করে সিলিং ফ্যানে ঝুঁলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে শশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শনিবার (২১ মার্চ) তিনজকে গ্রেফতার করেছে নড়িয়া থানা পুলিশ। এর আগে শুক্রবার (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় উপজেলার পশ্চিম লোনসিং গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রাতে নড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের মা মাকসুদা বেগম। নিহত- তানিয়া আক্তার উপজেলার মধ্য লোনসিং গ্রামের ইমরান চৌকিদারের স্ত্রী।
মামলা ও স্থানীয় সূত্র জানান, ২০১৫ সালে নড়িয়া উপজেলার পশ্চিম লোনসিং গ্রামের চাঁন মিয়া চৌকিদারের ছেলে ইমরান চৌকিদারের (২৫) সঙ্গে একই উপজেলার কালিকাপ্রসাদ গ্রামের তাহের মাদবরের মেয়ে তানিয়া আক্তারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের ৭ মাস পর ইমরান মালয়েশিয়া চলে যায়। এই সুযোগে তানিয়া আক্তারকে তার শাশুরী রিনা বেগম (৫০), ভাসুর রাসেল চৌকিদার (৩৫), ননদ চায়না আক্তার (২৩) ও জা রত্না বেগম (৩০) বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রতিনিয়ত তাকে শাররীক ও মানষিক নির্যাতন করতো। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল শুক্রবার বাথরুম তৈরি করা নিয়ে তাদের সঙ্গে ঝগড়া হয় তানিয়ার। এক পর্যায়ে সন্ধ্যায় শশুর বাড়ির লোকজন তানিয়াকে স্বাসরোধ করে হত্যা করে সিলিং ফ্যানে ঝুঁলিয়ে রাখে এমনটাই অভিযোগ নিহতর পরিবারের। পরে রাতে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় তানিয়ার মা মাকসুদা বেগম (৪০) বাদী হয়ে চারজনকে আসামী করে নড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ শনিবার (২১ মার্চ) দুপুরে আসামী রিনা বেগম, চায়না আক্তার ও রত্না বেগমকে আটক করে।
নিহত তানিয়ার মা মাকসুদা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েকে শাররীক ও মানষিকভাবে নির্যাতন করতো ওর শশুর বাড়ির লোকজন। নির্যাতন সয্য করতে না পেরে ভিন্ন সংসার পাতে আমার মেয়ে। শুক্রবার মেয়ে এক্সটা বাথরুম তৈরি করছিল। তখন বাথরুম নিয়ে শশুর বাড়ির লোকজনদের সঙ্গে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এর পর্যায়ে আমার মেয়েকে স্বাসরোধ করে হত্যা করে রিনা, চায়না, রত্না ও রাসেল । আমি এ হত্যার বিচার ফাঁসি চাই। আসামী রাসেল চৌকিদারের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জানতে পারি পশ্চিম লোনসিং গ্রামের চৌকিদার বাড়িতে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যা করে সিলিং ফ্যানে ঝুঁলিয়ে রাখা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তর জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। সন্দেহ করা হচ্ছে ওই গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি নিয়মিত হত্যা মামলা হয়েছে। মামলার তিনজন আসামীকে আটক করে আদালতে সপর্দ করা হয়েছে। অন্য আসামীকে আটকের চেষ্টা চলছে।