
খোকন বিকাশ ত্রিপুরা জ্যাক , খাগড়াছড়ি :
খাগড়াছড়িতে টানা চারদিন ধরে চলছে ভারী বৃষ্টিপাত। ফলে জেলার শালবন, গুগড়া ছড়ি, নেন্সী বাজার, পুঙ্খিমুড়া,ভুয়াছড়ি সহ বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যে একাধিক স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন এলাকায় বাড়িঘর,দোকানপাট ভেঙ্গে গেছে। পাহাড় ধসে কয়েকটি জায়গায় রাস্তাঘাট সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। পরে স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী,পুলিশ, আনসার ভিডিপি ও রেড ক্রিসেন্টের সদস্যদের সহযোগিতায় রাস্তার চলাচল সচল হয়ে যায়। লাগাতার বৃষ্টির ফলে নদী-খাল উপচে পানি বাড়ছে, যার কারণে জেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা গুলোতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের একটি বিশেষ টিম বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে মাইকিং করে স্থানীয়দের সতর্ক করছেন।
সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুজন চন্দ্র রায় আজ শালবন, কুমিল্লা টিলা ও আশপাশের পাহাড়ি বসতিগুলো পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা লোক জনকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলছি। যেসব পরিবার ঝুঁকিতে আছে, তাদের দ্রুত সরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে।”
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও পৌর প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা বলেন,গত কয়েকদিন ধরে এখানে দুর্যোগময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কয়েক জায়গায় ছোট ছোট পাহাড় ধস হয়েছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে মাটিগুলো সরিয়ে রাস্তা ঘাট চলাচলে উপযোগী করেছি। আর নিম্নাঞ্চলে বসবাসরত লোকজনকে বন্যা থেকে নিরাপদে সরে আসার জন্য মাইকিং চালাচ্ছি। পাহাড় ধসের হাত থেকে নিরাপদে আশ্রয়ে আসার জন্যও মাইকিং চালাচ্ছি।
সারা জেলায় আমরা বন্যা ও পাহাড় ধস থেকে নিরাপদের জন্য ১২৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার সার্বিকভাবে পরিস্থিতি মনিটরিং করছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রতিটি উপজেলায় জরুরি সাড়া দিতে প্রস্তুত রয়েছে ফায়ার সার্ভিস, স্বাস্থ্য ও স্থানীয় প্রশাসনের টিম। এছাগাও মাইকিং করছি, আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে খাবারের ব্যবস্থা করেছি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, খাগড়াছড়ি অঞ্চলে আগামী দুই দিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোর জন্য অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি শুকনো খাবার ও ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ।