ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩রা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩রা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সড়কে বেপরোয়া চাঁদাবাজি: সেনা অভিযানে আটক ২

স্টাফ রিপোর্টার, খাগড়াছড়ি :
খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় সংগঠনের নামে সড়কে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির অভিযোগে সেনা অভিযানে দুই জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ এবং চাঁদা আদায়ের রশিদ বই জব্দ করা হয়েছে।

 

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার (২৮ মে) গভীর রাতে সেনাবাহিনীর ২০ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি, সিন্দুকছড়ি জোনের একটি সি-টাইপ টহল দল অভিযান চালায়। ক্যাপ্টেন মো. শাইয়েন কাদিরের নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযানে গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া বাজার এলাকা থেকে মো. খলিলুর রহমান (৪৭) ও মো. আবু সায়েদ (৪৫) নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তারা দু’জনই হাফছড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা।

 

স্থানীয় বাসিন্দা ও চালকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে গুইমারা উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে,বিশেষ করে জালিয়াপাড়া, কাসেম হোটেল মোড়, গুইমারা বাজার ও হাতিমোড়া এলাকায়,বিভিন্ন ভুয়া সমিতি ও সংগঠনের ব্যানারে চাঁদা আদায় করা হতো।

 

চাঁদার পরিমাণ ছিল পণ্যের ধরন ও গাড়ির আকার অনুসারে, প্রতিটি ট্রাক থেকে প্রতিদিন আদায় হতো ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে গাড়ি আটকে দেওয়া হতো বলেও অভিযোগ রয়েছে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাকচালক জানান,“খাগড়াছড়ি থেকে বারইয়ারহাট পর্যন্ত মাল নিয়ে যেতে গেলে আমাদের অন্তত ৮ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। প্রতিটি জায়গায় আলাদা আলাদা লোকজন এসে টাকা দাবি করে। আমরা অনেকবার প্রতিবাদ করেছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।”

 

পেট্রোল কমান্ডার ক্যাপ্টেন মো. শাইয়েন কাদির বলেন, “চাঁদাবাজির মতো অপরাধের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। আটককৃত দুই ব্যক্তি সড়কে চাঁদা উত্তোলনের সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছে। তাদের গুইমারা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।”

 

গুইমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,“আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গুইমারাসহ পুরো এলাকায় এ ধরনের অপরাধ নির্মূলে অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

 

সড়কে অবৈধ চাঁদাবাজি শুধু চালকদের নয়, পুরো অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নিয়মিত এমন অভিযান অব্যাহত থাকলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। তারা এসব অপকর্মে জড়িত চক্রের মূল হোতাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।


error: Content is protected !!