শরীয়তপুর প্রতিনিধি: করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই লগডাউন ভেঙ্গে অশান্ত হয়ে উঠছে শরীয়তপুর। প্রায়ই কোন না কোন এলাকায় ঘটছে বাড়ি ঘরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা। শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিনোদপুরে আ’লীগ নেতাসহ দুই ইউপি সদস্যের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল দুপুরে রামদা, সেন, টেট্টাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রাদি নিয়ে তাদের বাড়িতে অর্তকিত হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এসময় বসত ঘর ও আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনা এখনো কোন মামলা দায়ের করা হয়নি।
ভূক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানায়, বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও বিনোদপুর ইউনিয়ন আওমামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান লিটন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ বিএম মোজাম্মেল হকের অনুসারী। বর্তমান সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তার অনুসারীদের সাথে লিটন মুন্সির বিরোধ চলে আসছিল। মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় বাকাউল মুন্সী, হারুন মুন্সী, সোহেল মুন্সী, নুরুল ইসলাম সরদার, আলী হোসেন তালুকদারের নেতৃত্বে দুই আড়াইশ লোক দেশীয় অ¯্রাদি ঢাল,শর্কি, রামদা নিয়ে আসাদুজ্জামান লিটন ও বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে সদস্য কল্পনা বেগমের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর করে বলে অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী পরিবারে সদস্যরা। এসময় তাদের বসত ঘর কুপিয়ে আসবাবপত্র ভাংচুর করে তারা।
বিনোদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান লিটন অভিযোগ করে বলেন, আমি বিভিন্ন সোর্স থেকে সংবাদ পাচ্ছিলাম আমার বাড়ি ঘরে হামলা করে আমাকে দেশ ছাড়া করা হবে। গতকাল সকালে হঠাৎ দেখি আমার বাড়ির আশপাশে দুইতিন গ্রæপে বিভক্ত হয়ে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। আমি তাদের উপস্থিতি টেরপেয়ে বাড়ি থেকে সটকে পরি। এরপর পুলিশ আশপাশের লোকজন সরিয়ে দেয়। তার কতক্ষণ পরেই আমার বাড়িতে এ হামলা ও ভাংচুর করা হয়। আমর কোন দোষ নেই। আমি বিএম মোজাম্মেল হকের সমর্থক ছিলাম- এটাই আমার অপরাধ। আমি ১ নং প্যানেল চেয়ারম্যান হলেও ইউনিয়ন পরিষদের যেতে পারি না। আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।
আসাদুজ্জামান লিটনের বোন মোর্শেদা, বকুল বেগম ও স্ত্রী সাকিলা বেগম জানায়, কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই দেখি দুই তিনশত লোক ঢাল, শুর্কি, টেট্টা, বল্বব নিয়ে বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা ভয়ে ঘরের ভিতরে খটের নিচে লুকিয়ে থাকি। তারা বাহির থেকে ঘর কোপাতে থাকে। আমাদের সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। বাড়ির টয়লেটটাও কুপিয়ে চুরমার করে দিয়েছে।
ইউপি সদস্য কল্পনা অভিযোগ করে বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের লোক। জীবনভর আওয়ামী লীগ করেছি। আর এখন আওয়ামী লীগের লোকজন আমাদের বাড়ি ঘর ভাংচুর করে। আমাদের অপরাধ আমরা বিএম মোজাম্মেলের সমর্থক ছিলাম।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম উদ্দিন বলেন, পুলিশের উপস্থিতিতে হামলার অভিযোগ ভিত্তিহীন। পুলিশ ওই গ্রামে একটি মামলার কাজে ছিল। পুলিশ চলে আসার ঘন্টা খানেক পরে লিটন মেম্বারের প্রতিপক্ষের লোকজন তার বড়িতে হামলা করেছে- এমন সংবাদ পাই। সাথে সাথে মোবাইল ওয়ান ও চিকন্দি ফাঁড়ির পুলিশ পাঠানো হয়। ততক্ষনে বাড়ি ঘরে হামলা করে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। তাই পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারে নাই। এখনো আমরা কোন অভিযোগ পাই নি। অভিযোগ পেয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।