
নড়িয়া (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি: শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মা নদীতে এক জেলের জালে একসাথে ধরা পড়ল ৮৬ টি পাঙ্গাস! মুহূর্তেই ভাগ্য খুলে না খুব ক্ষতি হয়ে গেল ওই জেলে। সকাল বেলা খালি হাতে জাল নিয়ে নদীতে নামল জেলেও কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সাড়ে চার লাখ টাকা নিয়ে হাঁসি মুখে বাড়ী ফিরল ভাগ্যবান জেলে হানিফ বেপারী।
একসাথে ৮৬ টি পাঙ্গাশ পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হানিফ বেপারী। অনেক কষ্টে ধারদেনা করে জাল নৌকা কিনে পাঙ্গাস মাছ ধরার জন্য নদীতে নেমে ছিলেন। সকাল বেলার অসহায় হানিফ বেপারী এখন কয়েক লাখ টাকার মালিক। নড়িয়া উপজেলার ঘড়িসার ইউনিয়নের হালইসার মৎস্য গ্রামের মৎস্যজীবি হানিফ বেপারী।
সোমবার সকালে পাঙ্গাস মাছ ধরার জন্য নৌকা জাল নিয়ে নদীতে নামেন হানিফ বেপারী। নদীতে জাল ফেলার কিছু সময় পরে জাল তুলতেই দেখেন জালে ধরা পড়েছে এক ঝাঁক পাঙ্গাস মাছ। পরে গুনে দেখেন একসাথে জালে ধরা পড়েছে ৮৬ টি পাঙ্গাস মাছ। একবার জাল ফেলে এই ভাগ্য ফিরে গেল জেলে হানিফ বেপারীর। তার চালে একসাথে এতগুলো মাছ আটকা পড়েছে এমন সংবাদে আশপাশের এলাকার অনেক লোকজন ভিড় জমিয়েছে মাছ দেখার জন্য।
জালে ধরা পড়া প্রতিটি পাঙ্গাস মাছের ওজন ৫ কেজি থেকে ১৫ কেজি ওজনের। এই পাঙ্গাস গুলোর ওজন আনুমানিক ৭৭৪ কেজি। যার বাজার মূল্য ৪, ৫০,০০০ (চার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা।
জেলে হানিফ বেপারী বলেন, মা ইলিশ প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞা মেনে মাছ ধরতে নদীতে না নেমে অভিযানের পড়ে পাঙ্গাস মাছ ধরার প্রস্তুতি নিয়ে ছিলাম আগে থেকেই। অভিযানের পর থেকে প্রতিদিন এই কমবেশি নদীতে জল ফেলেছি। তবে জানে তেমন কোনো পাঙ্গাস মাছ ধরা পড়েনি। মাঝেসাজে দেখতে পেতাম আবার অনেক সময় খালি হাতে ফিরে আসতাম। তবে আল্লাহর অশেষ রহমতে আজ আমার জালে একসাথে ৮৬ টি পাঙ্গাস মাছ ধরা পড়েছে। একসাথে এতগুলো মাছ পেয়ে আমি অনেক খুশি। আসলে ধারদেনা করে আমি এই জাল নৌকা কিনেছি। আজ আল্লাহ আমার আশা পূরণ করেছে। আমার এখন আর কোনো দুঃখ কষ্ট নাই। এই টাকা দিয়ে আমি সুন্দর ভাবে মাছের ব্যবসা করতে পারব এবং আমার পরিবার নিয়ে ভালোভাবে বাঁচাতে পারব ইনশাআল্লাহ।
স্থানীয় মৎসজীবীরা বলেন, পদ্মা নদীতে এত বড় সাইজের পাঙ্গাস এতগুলো একসাথে কখনোই ধরা পড়েনি। এটা অবাক করার মত ঘটনা। হানিফ বেপারীর ভাগ্য অনেক ভালো। আশা করি এতে হানিফ বেপারীর দুঃখ কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে। তবে এ বছর নদীতে কোন ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। ইলিশ মাছের সংখ্যা খুবই কম। সবাই যদি এমন কম বেশি পায় তাহলে আমরা আমাদের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারব। নদীতে ইলিশ মাছ কম হওয়ায় আমাদের সকল জেলেদের অবস্থা খুবই খারাপ।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, ইলিশের প্রজনন মৌসুম এর সাথে সাথে এখানে পাঙ্গাস মাছের প্রজনন মৌসুম শুরু হয়। এজন্য পদ্মা নদীতে পাঙ্গাসের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে কৃষকদের সালে ঝাকে ঝাকে পাঙ্গাস মাছ ধরা পড়ছে। এতে ইলিশ মাছ ধরতে আশা জেলেদের ক্ষতি কিছুটা হলেও কমিয়ে আনতে পারবে। পাঙ্গাস মাছের সাইজ, রেট অনেকটা কম। তাই এ সময়টা সাধারণ মানুষ ইচ্ছে করলে তা কিনে খেতে পারছেন। দেশি পাঙ্গাশ মাছ পাওয়ায় দামটাও কমেছে।