
শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ নড়িয়ায় স্কুল ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ! জানানানি হওয়ায় পর চরিত্রহীন বলায় আত্মহত্যা করেছে মেয়েটি!!! শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় স্বপ্না কবিরাজ (১৪) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে চরিত্রহীন বলে গালি দেয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানা যায়।
এ ঘটনায় সোমবার (২৩ মার্চ) দুপুরে নড়িয়া থানায় একটি মামলা করেছে স্বপ্নার মা লাবনী কবিরাজ। এর আগে ২২ মার্চ (রবিবার) বিকেলে উপজেলার নীলগুন গ্রামের নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত- স্বপ্না কবিরাজ নীলগুন গ্রামের মালদ্বীপ প্রবাসী বিপুল কবিরাজ ও লাবনী কবিরাজ দম্পত্তির মেয়ে। সে ভেদরগঞ্জ প্রতিভা সাইন্স প্রিপ্রারেটরী স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী।
স্থানীয় ও নড়িয়া থানায় মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর নড়িয়া উপজেলার নীলগুন গ্রামের লাবনী কবিরাজের বড় মেয়ে অসুস্থ হয়ে গেলে ছোট মেয়ে স্বপ্না কবিরাজকে প্রতিবেশি সুশীল বাছারের মেয়ে প্রাপ্তি বাছার ও তার বান্ধবী জিতুর কাছে রেখে ডাক্তার দেখাতে ঢাকা যায় লাবনী। রাতে মৃত ভানু বাছারের একটি ঘরের রুমে ঘুমাতে যায় স্বপ্না কবিরাজ। ঘুমিয়ে পরলে রাত ১২ টার দিকে ভানু বাছারের ছেলে সুজিত বাছার (৩০) ঘুমন্ত অবস্থায় ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বপ্না কবিরাজকে ধর্ষণ করে। ঘুম ভাঙলে সুজিতকে দেখে এ ঘটনা সবাইকে বলে দিবে বললে। স্বপ্নাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও মৃত্যুর হুমকি দেয়। স্বপ্না ভয়ে পরিবার ছাড়া কাউকে কিছু বলে নি।
গতকাল ২২ মার্চ (রবিবার) দুপুরে সুজিত বাছারের ভাই অজিত বাছার (৩৫), ভাবি রিনা রানী মন্ডল (৩০) ও বোন ভানু বাছার মিলে স্বপ্না কবিরাজকে ডেকে নিয়ে চরিত্রহীন বলে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। স্বপ্না লজ্জায়, ঘৃণায় বাড়িতে গিয়ে বিকেলে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তর জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনা নিহতর স্বপ্নার মা লাবনী কবিরাজ সোমবার দুপুরে নড়িয়া থানায় একটি মামলা করেন।
নিহত স্বপ্না কবিরাজের মা লাবনী কবিরাজ বলেন, সুজিতের ভাই অজিত, রিনা ও পারুল আমার ছোট মেয়েকে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে বলে, তুই নাকী বিভিন্ন লোকজনের কাছে আমাদের বদনাম বলিস। তুইতো নষ্টা, চরিত্রহীন, তোর স্বভাব চরিত্র ভালো না, তুই বিভন্ন যায়গায় অপকর্ম করে সুজিতের দোষ দিস। তুই গলায় দঁড়ি দিয়ে মরতে পারিস না। তুই মরলে এলাকা ভালো থাকবে। ওদের এ কথাগুলো শুনে সয্য করতে না পেরে মেয়েটা আত্মহত্যা করেছে। এর আগে সুজিত বাছার আমার মেয়েকে ধর্ষণও করেছিল। আমি ওদের বিচার চাই।
নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, স্বপ্নার আত্মহত্যার ঘটনায় লাবনী কবিরাজ থানায় একটি মামলা করেছে। মামলার আসামী অজিত বাছার ও তার মা পারুল রানী বাছারকে গ্রেফতার করে আদালতে সপর্দ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।