
একটি সাশ্রয়ী, স্বয়ংক্রিয় এবং ব্যবহারবান্ধব কফি ও চা সরবরাহকারী ভেন্ডিং মেশিন তৈরি করেছেন বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড রিসার্চ (নিটার) এর ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের একদল উদ্যমী ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থী। তাঁদের দাবি, এটি কেবল একটি শিক্ষাগত প্রজেক্ট নয়, বরং একটি পূর্ণাঙ্গ প্রোডাক্ট যার মাধ্যমে কফি ও চা প্রেমীদের স্বাদের অভিজ্ঞতা বদলে যেতে পারে।
এই উদ্যোগের শুরু হয় দ্বিতীয় বর্ষের শেষ দিকে, যখন ফরহাদ হোসেন মুন এই চিন্তার বীজ বপন করেন। তাঁর সঙ্গে হাত মেলান হাসিবুল হাসান মবিন। পরবর্তীতে টিমে যুক্ত হন আমমার বিন মহসিন, আফ্রিদি এবং মোহাম্মদ আলী। টানা সাত-আট মাস পরিশ্রম করে দলটি প্রোটোটাইপ ডেভেলপমেন্ট, যন্ত্রপাতির সেটআপ, সফটওয়্যার অপ্টিমাইজেশন এবং ইউজার এক্সপেরিয়েন্স উন্নয়নে কাজ করে।
তাঁদের তৈরি ভেন্ডিং মেশিনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিভিন্ন স্বাদের চা ও কফি তৈরি করতে সক্ষম। ব্যবহারকারীরা তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী পানীয় কাস্টমাইজ করতে পারেন। মেশিনের কার্যপ্রণালী, ব্যবহারবিধি ও কাস্টমাইজেশন অপশনসহ বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করতে দলটি তৈরি করেছে একটি ওয়েবসাইট—clkbx.com। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা সরাসরি সার্ভিস রিকোয়েস্টও জানাতে পারেন।
প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের এই যাত্রায় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে নির্মাতাদের। তবুও তাঁরা নিজেদের লক্ষ্য থেকে পিছপা হননি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ খাতে অটোমেশনের গুরুত্ব অনুধাবন করেই তাঁরা এই প্রোডাক্টটি তৈরি করেছেন।
এই উদ্ভাবনের পেছনে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছেন শিক্ষার্থীদের বিভাগের শিক্ষকরা। বিশেষ করে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মুয়াজ রহমান এবং সাখাওয়াত পারভেজ তাঁদের দিকনির্দেশনা ও উৎসাহ প্রকল্পটিকে সফল করে তুলতে সহায়তা করেছে।
তাঁদের বিশ্বাস, এই প্রোডাক্ট সবার সহযোগিতা ও ভালোবাসা পেলে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও জায়গা করে নিতে পারবে।