ঢাকা, শনিবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ঢাকা, শনিবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খাগড়াছড়িতে জনকেলি উৎসবের মধ্যদিয়ে মারমাদের সাংগ্রাইং শুরু

খোকন বিকাশ ত্রিপুরা জ্যাক,খাগড়াছড়ি:
মারমা উন্নয়নের সংসদ ও মারমা যুব কল্যাণ সংসদের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, পানি খেলা (জলকেলি)’র ঐতিহ্যবাহী নাচ-গান ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে খাগড়াছড়িতে মারমা ও রাখাইন সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসব শুরু হয়েছে।

 

 

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালে জেলা শহরের পানখাইয়া পাড়া থেকে বর্ণাঢ্য শোভা যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। শোভাযাত্রাটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শাপলা ঘুরে আবার পানখাইয়া পাড়ায় এসে শেষ হয়। পরে পানি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জলকেলি উৎসবের শুভ উদ্বোধন করেন রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান।

 

সাংগ্রাই বাংলাদেশি মারমা এবং রাখাইন জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষ উৎসবের নাম, যা প্রতি বছর এপ্রিল মাসে মাঝামাঝি সময়ে পালিত হয়। যদিও এটি মারমাদের অন্যতম প্রধান একটি।ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান, তবে রাখাইনরাও নিজস্ব নিয়মে সাংগ্রাইয়ের মাধ্যমে বর্ষবরণ করে নেয়। মারমাদের ক্ষেত্রে তাদের বার্মা বর্ষপঞ্জি অনুসারেই এটি পালন করা হয়।

 

মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী জলকেলি বা জলোৎসবে তরুণ-তরুণীরা একে অপরের দিকে পানি নিক্ষেপ করে উল্লাস প্রকাশ করে। মার্মা জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস এই পানি উৎসবের মধ্য দিয়ে অতীতের সকল দুঃখ-গ্লানি ও পাপ ধুয়ে-মুছে যাবে। সে সাথে তরুণ-তরুণীরা একে অপরকে পানি ছিটিয়ে বেছে নেবে তাদের জীবন সঙ্গীকে। এছাড়াও উৎসব উপলক্ষে নানা খেলাধুলা, পিঠা উৎসব, মারমাদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য ও ওপেন কনসার্টের আয়োজন করা হয়।

 

বৈসাবি উৎসব উপভোগ করতে এ বছর খাগড়াছড়ি এসেছে বিপুল সংখ্যক পর্যটক। তারা এ উৎসব দেখে অভিভূত। বৈসাবি এক সময় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য হলেও এখন সার্বজনীন ও জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। এই উৎসবের মধ্যে দিয়ে পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আরো সুদৃঢ় হোক এ প্রত্যাশা জনপ্রতিনিধিসহ সকলের।

 

এ জলকেলি উৎসবে জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার,জোন কমান্ডার লে: কর্ণেল মো. খাদেমুল ইসলাম, মারমা উন্নয়ন সংসদের প্রতিনিধিসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

 

প্রসঙ্গত;মারমাদের বর্ষপঞ্জিকাকে “ম্রাইমা সাক্রঃয়” বলা হয়। “ভ্ৰাইমা সাক্রঃয়” এর পুরনো বছরের শেষের দুই দিন আর নতুন বছরের প্রথম দিনসহ মোট তিনদিনকে মারমাদের প্রধান সামাজিক উৎসব সাংগ্রাই হিসেবে পালন করে থাকে। আগে।“ ম্রাইমা  সাক্ৰঃয়” অনুযায়ী এই তিনদিন ইংরেজি ক্যালেন্ডারের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝিতে পড়লেও এখন ইংরেজি ক্যালেন্ডারের সাথে মিল রেখে এপ্রিলের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে পালন করা হয়। ১৩ তারিখের সকালে পাঃং ছোয়াই (ফুল সাংগ্রাই) ১৪ এপ্রিল প্রধান সাংগ্রাই থেকে পানি খেলা। এছাড়াও মারমাদের ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো ৩-৪ দিনব্যাপি অনুষ্ঠিত হবে।


error: Content is protected !!