
খোকন বিকাশ ত্রিপুরা জ্যাক ,খাগড়াছড়ি :
পাচারে শিকার ৫নারীকে উদ্ধার;পাচার চক্রের মূলহোতা সুমি চাকমা ও চীনা নাগরিক সিয়াও সুসুই-কে গ্রেফতার করেছে খাগড়াছড়ি পুলিশ
খাগড়াছড়ির পানছড়ি থেকে বিভিন্ন প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে পাচারের শিকার হওয়া ৫জনকে ঢাকা তুরাগ থানার উত্তরা ১২নং সেক্টরের প্রিয়াংকা সিটির সাবদার হোসেন রোডের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে পাচার চক্রের (XIAO.SHUSHUI)সিয়াও সুসুই(৩৪) চীনা নাগরিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারের পর তাকে নিয়ে উদ্ধার অভিযানে নামে পুলিশ। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পাচারের শিকার ৫জনকে উদ্ধার হয়। পরবর্তীতে পরবর্তীতে পাচার চক্রের মূলহোতা সুমি চাকমা প্রকাশ হেলি(৩৬)-কে গ্রেফতার করা হয়।
৯ জুন ২০২৪,রবিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপারের কনফারেন্স হলে প্রেসব্রিফিং কালে পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, গত ১জুন ২০২৪ , সকালে ভিকটিম ও তার বান্ধবী (অন্য ভিকটিম সহ) পানছড়ি হতে প্রথমে সিএনজি গাড়িযোগে খাগড়াছড়ি সদরে আসে এবং পরবর্তীতে খাগড়াছড়ি সদর হতে বাসযোগে ঢাকায় যায়। ভিকটিমরা ঢাকায় পৌঁছার পরে মোবাইলে যোগাযোগ করে মানবপাচারকারী মূলহোতা সুমি চাকমা প্রকাশ হেলির সাথে।তিনি তাদেরকে ঢাকার উত্তরায় এক বাসায় নিয়ে তাদের মোবাইল কেড়ে নেয় এবং সবার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে তাদেরকে ঘরে আটক করে রাখে। আরও জানা যায়, অভিযুক্ত’দ্বয় পরষ্পর পার্শ্ববর্তী জেলার এবং উদ্ধারকৃত অপরাপর ভিকটিমদেরও একই প্রলোভন দেখিয়ে চীনে পাচার করার জন্য বিভিন্ন স্থান হতে এনে তাদের উক্ত বাসায় আটক করে রাখে। অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধভাবে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকা হতে ভিকটিমদেরকে চীনে নেওয়ার প্রলোভন দিয়ে তাদের পরিবারের অগোচরে ঢাকায় এনে তাদেরকে বিদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে ঢাকায় নিজ ভাড়া বাসায় আটক করে রাখে।
আমরা তদন্ত কৌশল অবলম্বন করে দেশব্যাপী সম্ভাব্য সকল জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে পানছড়ি থানা পুলিশের চৌকশ দলটি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার তুরাগ থানাধীন উত্তরা ১২নং সেক্টর প্রিয়াংকা সিটি,সাবদার হোসেন রোডের হরিজেন্টাল-১ ডুপ্লেক্স-২ ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে (XIAO.SHUSHUI)সিয়াও সুসুই(৩৪) নামে একজন চীনা নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে মানবপাচার চক্রের মূলহোতা সুমি চাকমা প্রকাশ হেলি(৩৬) -কে গ্রেফতার করেছে। কর্তমানে চক্রের জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, প্রথম ভিকটিমের মা গত ২জুন ও ৪ জুন দ্বিতীয় ভিকটিমের মা খাগড়াছড়ির পানছড়ি থানায় নিখোঁজ জিডি করেন। পরে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তা ধর এর সার্বিক দিক নির্দেশনায় তাদের নিখোঁজ সংক্রান্ত অবগত হয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মোঃ জসীম উদ্দিন এর নেতৃত্বে পানছড়ি থানার অফিসারদের সমন্বয়ে একটি আভিযানিক ও চৌকশ টিম গঠন করেন। বিভিন্ন তদন্ত কৌশল অবলম্বন করে দেশব্যাপী সম্ভাব্য সকল জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে পানছড়ি থানা পুলিশের চৌকশ দলটি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার তুরাগ থানাধীন উত্তরা ১২নং সেক্টর, প্রিয়াংকা সিটি, সাবদার হোসেন রোড, হরিজেন্টাল-১, ডুপ্লেক্স-০২ এর আসামি সুমি চাকমা প্রকাশ হেলি (৩৬) ও XIAO. SHUHUI (৩৪) দ্বয়ের ভাড়া বাসায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত বাসা হতে ভিকটিম ও তার বান্ধবী (অপর ভিকটিম) সহ উক্ত বাসায় অবস্থানরত অপরাপর ০৩ জন ভিকটিমদের উদ্ধার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য মোতাবেক অভিযুক্ত XIAO.SHUHUI (৩৪) অভিযুক্ত কে আটকের অভিযান পরিচালনা করা হয়। ভিকটিমদের বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে গত ০১/০৬/২০২৪ খ্রিঃ তারিখের পূর্ব হতে বেশ কিছুদিন যাবত অভিযুক্ত সুমি চাকমা প্রকাশ হেলি (৩৬) পরিচিত মোবাইল ফোনে হোয়াটস অ্যাপ এর মাধ্যমে ভিকটিমকে চীন দেশে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখায়। একপর্যায়ে ভিকটিম চীনে যাওয়ার জন্য রাজি হয় এবং বিষয়টি অপর ভিকটিমকে জানালে সেও চীনে যাওয়ার জন্য রাজি হয়। পরবর্তীতে গত ০১/০৬/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ সকালে ভিকটিম ও তার বান্ধবী (অপর ভিকটিম) পানছড়ি থেকে প্রথমে সিএনজি গাড়ি যোগে খাগড়াছড়ি সদরে আসে এবং পরবর্তীতে খাগড়াছড়ি সদর হতে বাস যোগে ঢাকায় যায়। ভিকটিম দ্বয় ঢাকায় পৌঁছার পরে মোবাইলে যোগাযোগ করে অভিযুক্ত সুমি চাকমা প্রকাশ হেলির সাথে। তিনি তাদেরকে ঢাকার উত্তরায় একবাসায় নিয়ে তাদের মোবাইল কেড়ে নেয় এবং সবার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে তাদেরকে ঘরে আটক করে রাখে। আরও জানা যায়, অভিযুক্ত’দ্বয় পরষ্পর পার্শ্ববর্তী জেলার এবং উদ্ধারকৃত অপরাপর ভিকটিমদেরও একই প্রলোভন দেখিয়ে চীনে পাচার করার জন্য বিভিন্ন স্থান হতে এনে তাদের উক্ত বাসায় আটক করে রাখে।
চীনা নাগরিক সিয়াও সুসুই
অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধ ভাবে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকা হতে ভিকটিমদেরকে চীনে নেওয়ার প্রলোভন দিয়ে তাদের পরিবারের অগোচরে ঢাকায় এনে তাদেরকে বিদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে ঢাকায় নিজ ভাড়া বাসায় আটক করে রাখে। উক্ত ঘটনার বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে পানছড়ি থানায় মামলা রুজু করা হয়। সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রটিকে গ্রেফতারের জন্য ধৃত আসামীকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে। এই চক্রে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্য আমাদের চৌকশ আভিযানিক টিম কাজ করে যাচ্ছে।