ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩রা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩রা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘বিশেষ ব্যবস্থা’ নেওয়ার হুমকি ইরানের

দখলদার ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালাতে পারে বলে এক প্রতিবেদেন জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের অপর সংবাদমাধ্যম এক্সিওস জানায়, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক চুক্তি আলোচনা ভেস্তে গেলে ইসরায়েল তাৎক্ষণিকভাবে ইরানে হামলা শুরু করবে।

এমন হুমকির মুখে দখলদারদের পাল্টা হুমকি দিয়েছে ইরান। দেশটি বলেছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি কার্যকর ব্যবস্থা না নেয় তাহলে নিজেদের পারমাণবিক অবকাঠামো রক্ষায় তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘বিশেষ ব্যবস্থা’ নিতে বাধ্য হবে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বৃহস্পতিবার (২২ মে) জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের কাছে একটি চিঠিতে বলেছেন, “ইহুদিবাদী ইসরায়েলের যে কোনো দুঃসাহসিকতার বিরুদ্ধে ইরান কঠোর সতর্কতা দিচ্ছে। সন্দেহাতীত ইসরায়েলি সরকারের যে কোনো ধরনের অনৈতিক কাজ ও হুমকির জবাব দেবে। ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানাচ্ছি। যদি এগুলো বিবেচনায় না নেওয়া হয়, তাহলে পারমাণবিক অবকাঠামো রক্ষায় ইরানকে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করা হবে।”

ইরানে সপ্তাহব্যাপী হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল, পুরোদমে চলছে প্রস্তুতি

ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোতে হামলা চালাতে পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। অন্যবারের মতো এবার শুধুমাত্র একদিনেই এ হামলা থেমে যাবে না। এটি অন্তত এক সপ্তাহব্যাপী চলবে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসকে বৃহস্পতিবার (২২ মে) এ তথ্য জানিয়েছেন দখলদার ইসরায়েলের দুটি সূত্র।

তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে যে পারমাণবিক আলোচনা চলছে সেটি ভেস্তে যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। আলোচনা ভেস্তে গেলেই ইরানে দ্রুত সময়ের মধ্যে হামলা চালানো শুরু করবেন তারা।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মধ্যে কয়েকটি আগেও ধারণা ছিল, যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের পারমাণবিক চুক্তি আলোর মুখ দেখবে। কিন্তু এখন তাদের কাছে তথ্য আছে, এই চুক্তি হবে না। আর এমন কিছু হলে ইসরায়েলকে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ইরানে হামলা চালাতে হবে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। তবে কেন দ্রুত হামলা চালাতে হবে সেটি স্পষ্ট করেননি তিনি।

দুটি সূত্রই অপর সংবাদমাধ্যম সিএনএনের একটি প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সূত্র। ইসরায়েলি সূত্রগুলো জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা তাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে পেরেছে কারণ তারা ব্যাপক পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। আর যুক্তরাষ্টের সেনাবাহিনী সবকিছু জানে এবং সহজেই বুঝতে পারে ইসরায়েল কীসের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

নেতানিয়াহু আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে জানিয়েছে ইসরায়েলি সূত্রটি বলেছেন, “নেতানিয়াহু আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার মুহূর্ত এবং ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। আলোচনা সফল না হলে ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোয় হামলা চালাতে ইসরায়েলকে সবুজ সংকেত দেবেন।”

তবে মার্কিন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন চিন্তিত যে, তাদের সবুজ সংকেত না পেলেও যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু ইরানে হামলা চালাতে পারেন।

পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এখনো মতপার্থক্য রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে শর্ত দিয়েছে, তারা বেসামরিক কাজের জন্যও নিজেদের ইউরেনিয়ামের মজুদ সমৃদ্ধ করতে পারবে না। তবে ইরান জানিয়েছে, ইউরেনিয়াম নিয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। চুক্তি হলেও তারা ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়াবে, চুক্তি না হলেও বাড়াবে।

ইসরায়েলি সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইরানে নতুন করে হামলার যে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে সেটি একদিনের হবে না। এটি হবে একটি সামরিক অভিযান। যা অন্তত এক সপ্তাহ স্থায়ী হবে। এ ধরনের অভিযান বেশ জটিল হবে। এছাড়া ইসরায়েল ও এই অঞ্চলের জন্যও এটি ঝুঁকিপূর্ণ হবে।

বিভিন্ন দেশ শঙ্কা প্রকাশ করেছে ইসরায়েল যদি ইরানের পারমাণবিক হামলা চালায় তাহলে ব্যাপক তেজস্ক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে

সূত্র: আলজাজিরা, এক্সিওস


error: Content is protected !!