
এম. নজরুল ইসলাম, গাজীপুর থেকে: গাজীপুরের কালীগঞ্জের তুমুলিয়া এলাকায় কলেজ ছাত্র আলমগীর হোসেন হত্যা মামলায় তিনজনের ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত। আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক ড. মো. ফজলে এলাহী ভূইয়া এ রায় প্রদান করেন। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নিহত আলমগীর হোসেন নরসিংদীর পলাশ থানার চরপাড়া গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে।
মৃত্যুদন্ড দন্ডপ্রাপ্তরা হলো, কালীগঞ্জ উপজেলার তুমুলিয়া গ্রামের চান মিয়ার ছেলে সোহেল, একই গ্রামের কফিল শেখের ছেলে জাকির ও মিন্নত আলী দেওয়ান ওরফে মিনার ছেলে আলামিন।
গাজীপুর আদালতের এপিপি মো: আতাউর রহমান খান জানান, নিহত আলমগীর হোসেন কালীগঞ্জ উপজেলার তুমুলিয়া গ্রামে তার নানা বাড়িতে বসবাস করে কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজে ডিগ্রীতে পড়াশোনা করতেন। পড়াশুনার পাশাপাশি তিনি পাশর্^বর্তী সিরাজুল ইসলামের সন্তানদের প্রাইভেট পড়াতেন। এই সুবাদে তাদের বাড়িতে অবাধ যাতায়াত ছিল আলমগীরের। কিন্তু সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী লিপি বেগমের সাথে আলমগীরের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে এমন অভিযোগ এনে এলাকার বখাটে হিসেবে পরিচিত আসামীরা তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। গত ২০০২ সালের ৭ অক্টোবর আলমগীর হোসেন প্রাইভেট পড়ানো শেষে সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে টিভি দেখছিলেন। এসময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযুক্ত সোহেল, জাকির এবং আলামিন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে লিপি বেগমের বসত বাড়ির ঘরে প্রবেশ করে। অভিযুক্ত তিনজন তাদের সহযোগীদের সহায়তায় আলমগীরের ওপর চড়াও হয়ে তাকে ছোড়া, ছেনিসহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। সেখান থেকে গুরুতর অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া কালে মারা যান আলমগীর। এ হত্যাকান্ডের পরদিন নিহতের পিতা আব্দুল বারেক বাদি হয়ে তিনজনকে আসামী করে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০০৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পুলিশ এ মামলায় চার্জশিট প্রদান করে।
মামলায় ১৪জনের স্বাক্ষীগ্রহণ ও দীর্ঘ শুনানী শেষে আজ বুধবার দুপুরে আদালত এই রায় প্রদান করেন। এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।