ঢাকা, শুক্রবার, ৯ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ঢাকা, শুক্রবার, ৯ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুবলীগ নেতা হত্যা মামলায় আরও ৩ আসামি গ্রেপ্তার

কুমিল্লায় আলোচিত যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন (৪০) হত্যা মামলায় আরও ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তিন আসামির কাছ থেকে জামাল হত্যায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাস, পরিহিত বোরকা, দুই জোড়া ক্যানভাস-সু উদ্ধার করা হয়। সোমবার (৮ মে) বেলা ১১টায় কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান।

এর আগে শনিবার (৬ মে) এবং রোববার (৭ মে) দুইদিনের অভিযানে তাদের ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি এলাকার মো. শাহপরান (৩৪), মো. রবি (৩৩) এবং একই এলাকার মো. সুমন (২৭)।

 

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, মামলাটি দায়ের হওয়ার পর গত শনিবার জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এর কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যায় জড়িত আসামিদের সহযোগীদের কাছাকাছি পৌঁছানো হয়। মামলায় ৮ অজ্ঞাতনামা আসামির মধ্যে ৩ জনকে শনাক্ত করে তাদের নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত শাহপরান ঘটনার সময় ঢাকায় ছিলেন। ঘটনাস্থলে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘটনার আগে ও পরে যোগাযোগ করেন তিনি। আত্মগোপনে থাকার ব্যাপারে পরিকল্পনা ও সহযোগিতা করেন শাহপরান। মামলার অপর আসামিরা শাহপরানের সহযোগিতায় বিভিন্ন স্থানে আত্নগোপন করেন। গ্রেপ্তার হওয়া রবি ঘটনার সময় ঘটনাস্থলের আশপাশে অবস্থান করে অভিযুক্তদের তথ্য দেওয়া ও পালাতে সাহায্য করেন। শাহপরানের সহযোগিতায় রবিও ঢাকায় আত্মগোপন করেন। রবি আসামিদের পালানোর পথও বলে দেন।

আব্দুল মান্নান বলেন, হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহার করা কালো রঙের মাইক্রোবাসটির চালক সুমন হোসেনকে শনিবার (৬ মে) রাতে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে সুমনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গৌরিপুর হাটের চান্দিনা এলাকায় তার ভাড়া বাসার খালি জায়গা থেকে মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়।

 

এখন পর্যন্ত যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ৩ আসামি এবং অজ্ঞাত আরও ৩ আসামিসহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র‍্যাব। এজাহারভুক্ত ৫ আসামি বিদেশে পালিয়েছেন। একজন দেশেই আত্মগোপনে রয়েছেন। এর আগে এ হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী তিতাস উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং তিতাস উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহিনুল ইসলাম সোহেল শিকদারসহ এজাহারভুক্ত ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে তোলার পর তাদের রিমান্ড চাওয়া হবে। আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করলে আরও তথ্য বেরিয়ে আসবে। একই সঙ্গে হত্যায় জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩০ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর পশ্চিম বাজার এলাকায় জামাল হোসেন নামের এক যুবলীগ নেতাকে বোরকা পরে গুলি করে তিন দুর্বৃত্ত। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত জামাল হোসেন তিতাস উপজেলার নোয়াগাঁও জিয়ারকান্দি গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। তিনি তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। গৌরিপুরের একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। হত্যাকাণ্ডের দুদিন পর জামাল হোসেনের স্ত্রী বাদী হয়ে ১৭ জনকে আসামি করে দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।


error: Content is protected !!