ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নাসিরনগরে হত্যা মামলার আসামী ধরতে ওসি’র গড়িমসি, ভুক্তভোগীদের সংবাদ সম্মেলন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের ছিদ্দিক মোল্লা ও আক্কল আলীর হত্যাকারী খুনিচক্র মোঃ সালাম মিয়া গংয়ের গ্রেফতারে নাসিরনগর থানার ওসি’র দায়িত্ব পালনে অবহেলার প্রতিবাদে ২ জুলাই ২০২৫ বুধবার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টস এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে (নিচ তলা) সকাল ১১ টায় সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

 

সাংবাদিক সম্মেলনে নিহতের পরিবারের পক্ষে সাইফুল ইসলাম ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, আমি সাইফুল ইসলাম, গ্রাম-সোনাতলা, ইউনিয়ন-গোয়ালনগর, উপজেলা-নাসিরনগর, জেলা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া। স্থানীয় সালাম মেম্বারের মেয়েকে ভালোবেসে বিয়ে করি। কিন্তু সালাম মেম্বার আমাদের বিয়ে অস্বীকার করে কিছুদিন পর সালাম মেম্বার এবং ১০ থেকে ১৫ জন লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসে অহেতুক ভাবে সালাম মেম্বার আমাকে মারধর করে, সালাম মেম্বার তার মেয়েকে নিয়ে যায় এবং ঘরবন্দী করে রাখে কিছুদিন পর আমার মা ছালমা বেগম সালাম মেম্বারের বাড়িতে যায় ঘটনা শোনার জন্য কিন্তু সালাম মেম্বার আমার মাকে মারধর করে পেটে লাথি মেরে বাড়ি থেকে বের করে দেন। মা কে আঘাত করার ঘটনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর কাছে বিচার চাই কিন্তু দুই মাস যাওয়ার পরেও আমরা কোন প্রকার বিচার পাইনি।

 

তিনি আরো বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে সালাম মেম্বার আমার বড় ভাই সিদ্দিক মোল্লা ও আক্কেল আলীকে গুরুতর ভাবে আঘাত করে যার কারনে আমার বড় ভাই সিদ্দিক মোল্লা ০৫/০৭/২০২৪ইং তারিখে মারা যান এবং আমার আরেক ভাই আক্কেল আলী গুরুতর আহত হয়। এই বিষয়ে নাসিরনগর থানা মামলা করা হয়, মামলা নাম্বার-১৩, তারিখ ০৭/১১/২০২৪ কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ পর্যন্ত কোন আসামি গ্রেপ্তার হয়নি, কিছুদিন পর সালাম মেম্বার পরিকল্পনা করে তার দলের একজন কে হত্যা করে আমাদের ফাঁসিয়ে দিবে এটা আমরা জানতে পারি এবং যাকে হত্যা করবে তাকে আমরা গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যেতে সাহায্য করি। যখন সালাম মেম্বার গং রা তাদের পরিকল্পনায় ব্যর্থ হয়, তার কিছুদিন পর তাদের গুষ্টির একজন জুরালি মিয়াকে হত্যা করে ধান ক্ষেতে ফেলে রাখে এই বিষয়ে সালাম মেম্বার থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ তদন্ত করে দেখে মিথ্যা ঘটনা তাই পুলিশ আর মামলা নেয়নি। পরে কোর্টে মামলা করে। আমাদের সাথে পূর্ব শত্রুতার জেরে সালাম মেম্বার আমার আরেক ভাই আক্কল আলীকে হত্যা করে পরে নাসরিনগর থানায় মামলা করা হয়। মামলা নাম্বার-০৮, তারিখ-১৩/০৫/২০২৫ কিন্তু দুঃখের বিষয় দুই দুইটি খুন সংঘটিত হওয়ার পরেও এখন পর্যন্ত নাসিরনগর থানার ওসি খাইরুল আলম কোন আসামি ধরেনি। যার ফলে আসামিরা বিভিন্নভাবে আমাদের কে হুমকি ধামকি এবং আমাদের বাড়িতে লুটপাট করে গরু ছাগল ধান ইত্যাদি নিয়ে গিয়েছে। আমরা আমাদের বাড়িতে থাকতে পারছি না।

 

তিনি বলেন, সালাম মেম্বার ওসির সহযোগিতায় নিয়ে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে এখনো পর্যন্ত হামলা করে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকিতে আমরা এলাকায় বসবাস করতে পারছি না। নাসিরনগর থানার ওসি কোন আসামি ধরে না বরঞ্চ তাদের হয়ে কাজ করছে। কয়েকবার ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার কে বিষয়গুলো অবগত করেও কোন সুরাহা হয় নাই। ওসি খায়রুল আলমের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে আসামিরা গ্রেফতার হবে না। আরো প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে।

 

তিনি বলেন, ২৬/০৬/২০২৫ ইং তারিখে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, ডিআইজি চট্টগ্রাম ও জেলা পুলিশ সুপার বরাবর ন্যায় বিচার চেয়ে আবেদন করেছি। এমতাবস্থায়, নিরুপায় হয়ে উপরোক্ত বিষয়ে সম্মানিত সাংবাদিক ভাইবোনদের মাধ্যমে আমরা ন্যায় বিচার পেতে বাংলাদেশ সরকারের সাহায্য প্রার্থনা করছি।


error: Content is protected !!