
শরীয়তপুরে মাদকসেবনের টাকা জোগাড় করতে এক মা-বাবা তাদের দেড় মাস বয়সী সন্তানকে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
সোমবার (২৩ জুন) বিকেলে শরীয়তপুর সদর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড চরপালং গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা ইব্রাহিম খলিল ও মা শ্রাবণী বেগমকে আটক করা হয়।
জানা যায়, শরীয়তপুর সদর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড চরপালং এলাকার ইব্রাহিম-শ্রাবণী দম্পতি মাদক সেবন ও মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ তাদের মা-বাবা ও এলাকাবাসীর।
পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, নেশার টাকা জোগাড় করতে না পেরে তারা সদ্যোজাত দেড় মাসের ছেলেকে প্রতিবেশী এক নারীর কাছে ৩১ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন ইব্রাহিম-শ্রাবণী দম্পতি।
বিষয়টি জানতে পেরে ছেলে ইব্রাহিম খলিল ও ছেলের বউ শ্রাবণীর বিরুদ্ধে পালং মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ঝরনা বেগম। অভিযোগের ভিত্তিতে ইব্রাহিম খলিল ও শ্রাবণী বেগমকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের হস্তক্ষেপে ৩১ হাজার টাকা পরিশোধ করে নাতিকে ফিরে পান ঝরনা বেগম। পরে মুচলেকা দিয়ে পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পান ইব্রাহিম খলিল ও শ্রাবণী বেগম।
এ ব্যাপারে ঝরনা বেগম বলেন, আমার ছেলে ইব্রাহিম খলিল ও ছেলের বউ শ্রাবণী নেশার সঙ্গে জড়িত। এ বিষয়ে তাদের নিষেধ করলে তারা আমাকে ও আমার স্বামীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করে। নেশার টাকা জোগাতে তারা সোমবার আমার দেড় মাসের নাতিকে বিক্রি করে দেয়। আমি জানতে পেরে পুলিশের সহযোগিতায় আমার নাতিকে উদ্ধার করি।
মাদক সেবন ও মাদক কারবারের কথা স্বীকার করে ইব্রাহিম খলিল বলেন, আমার বাবার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে এক বন্ধুকে দিয়েছিলাম ইয়াবা আনার জন্য। কিন্তু বন্ধু আমাকে মাল না দিয়ে টাকা মেরে দেয়। বাবার টাকা পরিশোধ করার জন্য বাধ্য হয়ে আমি আমার ছেলেকে ৩১ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। ছেলেকে বিক্রি করে বাবার পাওনা টাকা দিয়েছি। এ ছাড়া আমার কোনো উপায় ছিল না।
এ বিষয়ে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঝরনা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে ইব্রাহিম খলিল ও শ্রাবণী বেগমকে আটকের পর শিশুটিকে উদ্ধার করে তার দাদি ঝরনা বেগমের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে ঝরনা বেগম অভিযোগ তুলে নিলে মুচলেকা নিয়ে ইব্রাহিম ও শ্রাবণীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।