
প্রাচীন পৃথিবীর ‘সপ্তাশ্চর্যের’ অন্তর্ভূক্ত চীনের মহাপ্রাচীরের একটি অংশ ভাঙচুরের মাধ্যমে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগে একজন পুরুষ (৩৮) ও এক নারীকে (৫৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন এবং ইতোমধ্যে ঘটনাটির তদন্তও শুরু হয়েছে।
মহাপ্রাচীরের যে অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেটি পড়েছে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় শ্যাংজি প্রদেশের ইউইউ জেলায়। প্রাচীরের ৩২ নম্বর ব্লকটি এই জেলায় পড়েছে। ওই ব্লকেরই একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
৩২ নম্বর ব্লকটি নির্মাণ করা হয়েছিল মিং রাজাদের শাসনামলে। এই রাজবংশ ১৩৬৮ সাল থেকে ১৬৪৪ সাল পর্যন্ত চীনে রাজত্ব করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার ওই নারী ও পুরুষ উভয়ই পেশায় নির্মাণশ্রমিক। বাসা থেকে নিজেদের কর্মস্থলের দূরত্ব সংক্ষিপ্ত করতে তারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন।
পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রাচীরের যে অংশটি তারা ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন, সেখানে আগে থেকেই প্রাচীরের গায়ে একটি গর্ত ছিল। ইলেকট্রিক এক্সকেভেটরের মাধ্যমে তারা সেই গর্তটিকে আরও বড় করেছেন। এই কাজটি তারা করেছেন নিজেদের বাসা থেকে কর্মস্থলে যাতায়াতের পথ সংক্ষিপ্ত করতে।’
‘গত ২৪ আগস্ট এই ঘটনা জানতে পারে পুলিশ। তারপর অল্প সময়ের মধ্যে দু’জনকে গেপ্তার করা হয়েছে,’ বিবিসিকে বলেন ওই কর্মকর্তা।
প্রাচীন পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের অন্যতম এই মহাপ্রাচীরের নির্মাণ শুরু হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ২২০ সালে, শেষ হয় খ্রিস্টিয় ১৬ শতকে। যাযাবর মঙ্গল ও হুন দস্যুদের কবল থেকে রাষ্ট্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই প্রায় ১ হাজার ৮০০ বছর ধরে নির্মাণ করা হয় এই মহাপ্রাচীর।
প্রাচীন পৃথিবীতে মানুষের হাতে সৃষ্ট সবচেয়ে বড় স্থাপনা ছিল পাথর ও মাটি দিয়ে তৈরি এই মহাপ্রাচীর। তবে বিগত কয়েক শতক ধরে পাথর সংগ্রহ ও অন্যান্য কারণে মহাপ্রাচীরের অধিকাংশই ধ্বংস করে ফেলেছে স্থানীয় জনগণ। বর্তমানে এই মহাপ্রাচীরে দৈর্ঘ্য মাত্র ৮ হাজার ৮৫১ দশমিক ৮ মিটার, উচ্চতা স্থানভেদে ১৫ থেকে ২৬ ফুট এবং প্রশস্ততা ৪০ ফুট।
১৯৮৭ সালে চীনের মহাপ্রাচীরকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ বলে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘভিত্তিক সংস্থা ইউনেস্কো।