ঢাকা, শুক্রবার, ৪ঠা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ঢাকা, শুক্রবার, ৪ঠা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোটা একটা গ্রাম মিশে গেল মাটিতে

ভয়াবহ ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গেছে মরক্কোর পশ্চিম ও দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল। গ্রামের পর গ্রাম, শহরের পর শহর পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তুপে।

তেমনই একটি গ্রাম তিখত। শুক্রবার রাতের ভূমিকম্পের পর প্রায় ১০০ পরিবার অধ্যুষিত গ্রামটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তুপ সরানোর কাজ শুরু করছেন গ্রামের। রোববার তেমনই ধ্বংসস্তুপের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন ২৫ বছর বয়সী ওমর এইত এমবেরেক। কাঁদতে পারছেন না, কিন্তু তীব্র কষ্টে তার সজল হয়ে ওঠা চোখে উদ্ধার তৎপরতা দেখছিলেন তিনি।

এএফপির যখন তার সঙ্গে কথা বলতে চাইল, তখন প্রথমে সাড়া দেননি ওমর। একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আপনি আমার কাছে কী জানতে চান? আমার সব শেষ হয়ে গেছে।’

পরে ধীরে ধীরে তিনি জানান, এখন তিনি যেখানে দাঁড়িয়ে আছেন— সেটি তার বাগদত্তা মিনা এইত বিহির বাড়ি। আর এক সপ্তাহ পরেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তাদের।

শুক্রবার রাত ১১টার দিকে যখন ভূমিকম্প হওয়ার আগমুহূর্তে মোবাইল ফোনে ওমরের সঙ্গে কথা বলছিলেন মিনা। ভূমিকম্প শুরু হওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তার মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

উদ্ধারকারী বাহিনীর কর্মীরা তাদের বাড়ির ধ্বংসস্তুপ থেকে মিনার মরদেহ উদ্ধার করেছে। ধ্বংসাবশেষের আবর্জনা সরিয়ে ‍যখন মিনাকে উদ্ধার করা হয়, সেসময়ও তার হাতে মোবাইল ফোন ধরা ছিল। সেই ফোনটি ওমরকে হস্তান্তর করেছেন কর্মীরা।

ভূমিকম্পে ধসে যাওয়া মরক্কোর বিভিন্ন গ্রাম ও শহরের মতো তিখতও এখন ধ্বংসাবশেষের আবর্জনা, ভাঙাচোরা বাসন-কোসন, বাতিল জুতা প্রভৃতি নানা জঞ্জালে ভর্তি।

ভূমিকম্পে নিজের পরিবারের সদস্যদের হারানো তিখতের আরেক বাসিন্দা মহসিন আকসুম (৩৩) এএফপিকে বলেন, ‘এখানে জীবন শেষ হয়ে গেছে। এই গ্রাম এখন মৃত।’

গতানুগতিক ধাঁচের ঘরবাড়ি

মরক্বোর আর দশটি গ্রামের মতো তিখতের বাড়িঘরগুলোও পাথর, কাঠ এবং চুন-বালিমিশ্রিত কাদা দিয়ে তৈরি। রোববার গ্রামটিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন বাড়ির ধ্বংস্তুপের সমানে জড়ো হয়েছেন ওই বাড়ির জীবিত সদস্য, শোকে ভারাক্রান্ত আত্মীয়-স্বজন ও উদ্ধারকারী বাহিনীর সদস্যরা। তাদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন, তিখতে এর আগে কবে ভূমিকম্প হয়েছে— জানেন না তারা।


error: Content is protected !!