ঢাকা, বুধবার, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
ঢাকা, বুধবার, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মা-বাবা-বোনকে খুঁজে ফিরছে সাত মাসের হোসাইন

দাদা-নানার কোল বদল করতে করতে অবশেষে মাঝরাতে ঝালকাঠি সদরের বাসন্ডা ইউনিয়নের আগরপাশা গ্রামে এসে পৌঁছেছে সাত মাস বয়সী হোসাইন। আরেক অ্যাম্বুলেন্সের ফ্রিজিং কক্ষে ছিল হোসাইনের মা-বাবা ও সাত বছরের বোন লিমার মরদেহ। যাদের তিনজনই নিহত হয়েছেন মিরপুরের ঢাকা কমার্স কলেজ সংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তির সামনের সড়কে জমে থাকা পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে।

বেঁচে যাওয়া হোসাইনের চোখ এখন মা মুক্তা আক্তারকে খুঁজে ফিরছে। ক্ষণে ক্ষণে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে সে। তার কপালে ও পিঠে আঘাতের দাগ স্পষ্ট। কিন্তু নিজের কষ্ট আর অনুভূতি বোঝাতে পারছে না কাউকে।

দাদা নাসির হাওলাদার বলেন, পোলাডা কার কাছে দুঃখ কইবে হেই মানুষ খুইজ্যা পাইতেছে না। ওর দুঃখ কওয়ার কেউ রইলো না। ও মা-বাপ-বুইন খুইজ্যা পায় না। এরপরই ছোট্ট এই শিশুকে বুকে আগলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) মাঝ রাতে অ্যাম্বুলেন্স এসে থামে ঝালকাঠি পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আগরপাশা গ্রামে। একই সঙ্গে তিনজনের মরদেহ দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে এলাকাবাসী। স্বজন ও প্রতিবেশীদের কান্নায় হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণ হয়। দূর-দূরান্ত থেকেও শত শত মানুষ জড়ো হয় মর্মান্তিক মৃত্যুর শিকার মিজানের বাড়ি।

বেঁচে যাওয়া হোসাইন মোহাম্মদ দাদি নিরু বেগমের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। বাড়ির উঠোনে চলছে তিনজনের দাফনের প্রস্তুতি।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাতে অতিবৃষ্টিতে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সড়ক তলিয়ে যায়। মিরপুরের ঢাকা কমার্স কলেজ সংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তির সামনের সড়কে জমে থাকা পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে তিনজন একই পরিবারের। প্রাণে বেঁচে ফিরেছে মৃত মিজান-মুক্তা দম্পতির ৭ মাসের ছেলে হোসাইন।


error: Content is protected !!