
হোসাইন আহমদ সুজাদ, সিলেট থেকে: ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রতিনিয়ত করোনায় ঘরবন্দি মানুষের বাড়ীতে খাদ্য সহায়তা পৌছে দিচ্ছেন সিলেটে মুরাদের নাট্য দল “গ্রীণ বাংলা”। সিলেটের সংস্কৃতি অঙ্গনের কাছে খুবই পরিচিত এবং জনপ্রিয় নাম বেলাল আহমেদ মুরাদ। নাটক থেকে শুরু করে সমাজের সব ক্ষেত্রে সব সময় ব্যাতিক্রমধর্মী উদ্দ্যোগ নিয়ে থাকেন, এ জন্য থাকে অনেকেই ব্যাতিক্রমী মুরাদ বলে থাকেন। মেয়ে ছাড়া যেখানে কোনো নাটক দেখা যায়না সেখানে তিনি মেয়ে ছাড়া নাটক করে থাকেন, এটি ব্যাতিক্রম ধর্মী কাজের অন্যতম উদাহরণ এর জন্য সম্মামনা পেয়েছেন অনেক জায়গা থেকে ফেইসবুক ইউটিউবে ফলোয়ার কয়েক লাখের উপরে।
বর্তমানে করোনা মহামারি এবং লকডাউন থাকার ফলে সমাজের নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্তরা পার করছেন খুবই কঠিন সময়। এই মহামারিতে দেশের সংগঠন গুলো, রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালীরা বেশির ভাগ ছুটে যাচ্ছেন নিম œবিত্তদের কাছে,যার ফলে সমাজের মধ্যবিত্তরা নিজের সম্মানের কথা চিন্তা করে, কাউকে বলতে পারছেন না নিজ নিজ অভাবের কথা, ঠিক সেই সময় মধ্যবিত্তদের কাছে ব্যাতিক্রম ভাবে এগিয়ে এসেছেন সিলেটের নাট্য অভিনেতা বেলাল আহমেদ মুরাদ। তার পরিচালিত নাটকের দল গ্রীণ বাংলার ১২ সদস্যের টিম কে সাথে নিয়ে প্রথম দিকে মহামারির এই সময়ে নিজ এলাকায় মানুষের মাঝে বিতরণ করেন ত্রাণ সামগ্রী, এর পর নিজ এফবির আইডিতে পোস্ট করে বলেন, আপনি আমাদের মত মধ্যবিত্ত কিন্তু এই সংকট কালিন সময়ে আপনার অবস্থা কাওকে বলতে পারছেন না।
চিন্তা না করে আমাদের বলুন আমাদের দুই একজন আর আল্লাহ ছাড়া কেউ জানবে না। আমরা রাতে আপনার ঘরে খাবার পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করবো। এরপর ফোন আসে অনেকের কাছ থেকে রাতেঁর আধারেঁ খাবার পৌছে দেন তিনি, নাম পরিচয় গোপন রেখে ফেইসবুকে পোষ্ট করেন সব কিছু। এর পরেই মুরাদের এই সব ব্যাতিক্রমি উদ্যেগ দেখে থাকে আর্থিক সহায়তা দিতে দেশ বিদেশের অনেকে এগিয়ে আসেন। এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ড,এমেরিকা মধ্য প্রাচ্য সহ বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছ থেকে সহায়তা নিয়ে ১ হাজার এর বেশি মানুষের কাছে ১২ লক্ষ টাকার মুল্যর ত্রাণ সামগ্রী পৌছে দিয়েছেন তিনি যার প্রমাণ দিয়েছেন নিজের ফেইসবুক আইডিতে। ত্রাণ সামগ্রী তে তিনি গুরুত্ব দিয়েছিলেন সিলেট নগরীরর মধ্যবিত্তদের। এ যেনো ব্যতিক্রমধর্মী মুরাদের এক উজ্জল ব্যাতিক্রম উদ্দোগের দৃষ্টান্ত এখনো তার এ কার্যক্রম অব্যাহত।
এ সব বিষয় নিয়ে কথা হয় বেলাল আহমদ মুরাদের সাথে ভোরের সংবাদের । এ সময় বেলাল আহমদ মুরাদ বলেন, আমি প্রথমে ধন্যবাদ জানাই আমার নাটকের দল গ্রীণ বাংলাকে, গ্রিণ বাংলা দলের পরিচালক বিপ্লব এষ সহ প্রত্যক সদস্য মানবিক কাজ করতে স্বেচ্চায় এগিয়ে এসেছে। মুরাদ বলেন নাটক নির্মান করি তো, এইজন্য মানুষের ভিতরের খবর অনেকটাই বুঝতে পারি,বুঝতে পারলাম মধ্যবিত্তরা অনেক কষ্টে আছে, মধ্যবিত্তরা কাউকে বলতেও পারে না, তাই এগিয়ে আসা। আর আমার এই কাজ দেখে সিলেটের অনেক সংগটন সহ অনেকে এগিয়ে আসতেছেন মধ্যবিত্তদের পাশে, এটিই আমার বড় পাওয়া। মানুষ কেনে বিশ্বাস করে আপানকে এত টাকা দিলো এমন প্রশ্নের জবাবে মুরাদ বলেন , হ্যা, আজকাল বিশ্বাসের অনেক অভাব, কিন্তু উনারা আমাকে বিশ্বাস করে আমার মাধ্যমে উপহার দিচ্ছেন, এর জন্য উনাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমিও উনাদের বিশ্বাস রাখার চেষ্টা করি, পাশাপাশি আমরা উনাদের কাছে পর্যাপ্ত হিসাব এবং প্রমান পৌছিয়ে দেই। এই কাজ গুলো গ্রীন বাংলার ৮-১০ জন আমাদের সাথে কাজ করতেছেন এর মধ্যে প্রধান সহকারী হিসেবে আছেন গ্রীন বাংলার পরিচালক বিপ্লব কুমার এষ।
বেলাল আহমেদ মুরাদ আরো বলেন, আমাদের গ্রীন বাংলা পরিবারের শামীম ভাই ১০০ পরিবার কে এবং ফাহিম ভাই আরো অনেক পরিবার কে উপহার সামগ্রী দিয়েছেন। আমি এবং আমার পরিচালিত গ্রীণ বাংলা টিম দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য যে কোন সময় যে কোন ত্যাগ শ্বিকার করতে রাজি আছি।