
নাটোর প্রতিনিধি: ১৮ বছর পর, বহুল আলোচিত বড়াইগ্রাম থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ডাঃ আয়নুল হকের হত্যাকান্ডের রায়ে বিজ্ঞ আদালত সতের জন আসামীর মধ্যে ২ জনকে ফাঁসির দন্ডাদেশ, ১১ জনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস এবং অপর ৪ জনের মৃত্যু হওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ফাঁসির দন্ডাদেশ প্রাপ্তরা হলেন মহিষভাঙ্গা গ্রামের মৃত বাহার উদ্দিন মোল্লার পুত্র তোরাব আলী মোল্লা (৪৮) ও পলান উদ্দিন সরকারের পুত্র শামিম (৪২)।
বেকসুর খালাস পেয়েছেন সোহরাব মোল্লা, আতাউর রহমান, লুৎফর রহমান, আ.সালাম, নাজমুল মোল্লা, রেজাউল ইসলাম, মামুন হোসেন, আ.রহিম, ভুট্টু, আনিসুর রহমান ও বয়েন উদ্দিন মন্ডল। সোমবার নাটোরের অতিরিক্ত দায়রা জজ মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী এ রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্র পক্ষে এ মামলা পরিচালনা করেন পিপি এ্যাডঃ মাসুদ পারভেজ ও এ্যাডঃ সিরাজুল ইসলাম এবং আসামী পক্ষে এ্যাডঃ মোজাম্মেল হোসেন মন্টু।
ইতিমধ্যে মামলার ৪ জন আসামী মৃত্যুবরণ করায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তারা হলেন বনপাড়া নিবাসী মৃত কেফায়েত উল্লাহ প্রামানিকের পুত্র মরহুম একরামুল আলম, মহিষভাঙ্গা গ্রামের বাহার উদ্দিন মোল্লার পুত্র মরহুম সাহের উদ্দিন মোল্লা, হাকুর পুত্র আলামউদ্দিন ও কামারদহ গ্রামের ওয়াজেদ আলীর পুত্র সেন্টু।
নিহত ডাঃ আয়নুল হক বড়াইগ্রাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাঝগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
এ হত্যাকান্ডের পর ২০০২ সালের ৩১ মার্চে উপজেলার বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে একটি এজাহার দাখিল করেছিলেন নিহতের পুত্রবুধু নাজমা বেগম।
এজাহারকারী পুত্রবধূ নাজমা বেগম মামলার রায় শুনার পর জানান, ২০০২ সালের ২৮ মার্চ বৃহষ্পতিবার মহিষভাঙ্গা গ্রামের বাড়ি হতে চিকিৎসার জন্য বনপাড়া ডাঃ আনসারুল হকের ক্লিনিকে আসি। আমার শ্বশুর ডাঃ আয়নুল হক রাত পৌনে ৯ টার দিকে আমাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য ডাঃ আনসারুল হকের ক্লিনিকে আসেন। আমাকে রিক্সায় তুলে দেওয়ার সময় হঠাৎ ২৪/২৫ জন দুর্বৃত্ত চাইনিজ কুড়াল,রামদা, হাসুয়া, লোহার রড ইত্যাদি অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমাদের ঘিরে ফেলে শ্বশুরকে মারপিট, রড ও ছুরিকাঘাত করে।
দুর্বৃত্তরা আমাকে তাড়া করলে আমি প্রাণ ভয়ে দৌড়াইয়া পালাই। ওই রাতেই শ্বশুরকে মূমুর্ষাবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় পরদিন ২০০২ সালের ২৯ মার্চ দুপুর আড়াইটার দিকে মৃত্যুবরণ করেন।
মামলার উভয় পক্ষের আইনজীবী জানান, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। আমরা হাইকোর্টে সুবিচারের আশায় আপিল করবো।