স্টাফ রিপোার্টার, খাগড়াছড়ি :
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকের বাঘাইহাট বাজরে সাধারন জনগনের উপর আঞ্চলিক সংগঠনের গুলিতে শান্তি পরিবহনের সুপার ভাইজার মো. নাঈম হোসেন (২৮) গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় পানছড়িতে গণ অধিকার রক্ষা কমিটির আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে স্থানীয়রা।

২০ জুন ২০২৪ , বৃহস্পতিবার , সকাল ১১ টায় লোগাং আমতলি থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করে লোগাং ইউপি কার্যালয়ের সামনের সড়কে নারী নেত্রী মানেক পুদি চাকমার সঞ্চালনায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান অনিল কান্তি চাকমার সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

 সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন, ইউপডিএফ (প্রসিত) পানছড়ি উপজেলা ইউপিডিএফ (প্রসিত) সংগঠক বকুল চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বরুন চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সাধারণ সম্পাদক পরিণীতা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি সভাপতি রিপন ত্রিপুরা,পাহাড়ি ছাত্র পরিষদে পানছড়ি শাখা সভাপতি সুনিল ময় চাকমা সহ গন অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সঞ্চয় চাকমা প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পাহাড়ের সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত সামরিক-বেসামরিক সংস্থা সমুহ । সরকারের মদদে সশস্ত্র ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী (ইউপিডিএফ গনতান্ত্রিক ) সৃষ্টির পরপরই ঐ সকল সন্ত্রাসীদের দিয়ে খুন, গুম, অপহরণ সহ নানা অপকর্ম চালিয়ে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল করে তোলা হচ্ছে। সর্বশেষ গত ১৮ জুন রাঙামাটির সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাট বাজারে সরকার ও সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় অবস্থান করা ঐ সকল ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীরা তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভরত জনতার উপর এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে । এতে শান্তি পরিবহন বাস চালকের সহকারী মো. নাঈম হত্যার শিকার হয়েছেন। আমরা অবিলম্বে নাঈম হত্যার বিচার দাবি করছি একই সাথে অপরাধিদের দৃষ্টান্তমুলক  শাস্তির দাবি করছি।

বক্তারা হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, পাহাড়ি-বাঙালি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে খুনি ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। খূনিদের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতা বাঘাইহাট জোন কমান্ডার ও উপজেলা নির্বাহি অফিসারকে প্রত্যাহার করতে হবে। আমরা শান্তি চাই, শান্তিতে বসবাস করতে চাই। নিরাপদে ঘর থেকে বের হয়ে আবার ঘরে ফিরে আসতে চাই।                                              লক্ষ্মীছড়িতে হরতাল কর্মসুচির চিত্র (ছবি-প্রতিনিধি)
লক্ষ্মীছড়ি প্রতিনিধি জানায়, ১৮ জুন মঙ্গলবার দুপুরে রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকের বাঘাইহাট বাজরে উপজাতীয় সন্ত্রাসী গ্রুপের গোলাগুলিতে নাঈম গুলিবিদ্ধ হলে আহত অবস্থায় দিঘীনালা হাসপাতালে আনলে মারা যায়। একই সময় আহত হয় দুলেই চাকমা ও চিক্কো চাকমা নামে দুই নারী । বুধবার খাগড়াছড়িতে ময়না তদন্ত শেষে নাঈমের লাশ খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ির জুর্গাছড়ি এলাকায় পৌছলে স্বজনদের আজাহারি ও এলাকাবাসী বিক্ষোভে ফেটে পড়ে । তাৎক্ষনিক লক্ষ্মীছড়ির হাইস্কুল প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও নাঈমের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। অবিলম্বে নাঈম হত্যার বিচার দাবি করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে আজ বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীছড়িতে হরতাল কর্মসুচি পালিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য নাঈম জন্মের আগেই তার পিতা মো. নজরুল ইসলাম নিখোঁজ হন। ৪ বোন ১ ভাইয়ের মধ্যে নাঈম সবার ছোট। নাঈমের অন্তসত্তা স্ত্রী রয়েছে।